ঔষধের মেয়াদ দেখার নিয়ম
ঔষধের মেয়াদ দেখার নিয়ম

আজ আপনি জানতে চলেছেন কিভাবে ঔষধের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ জানতে হয়। সেটা জানা খুবই সহজ। তারপরও অনেকেই এ ব্যাপারে অর্থাৎ ঔষধের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ কিভাবে দেখতে হয়, তা জানে না। তো চলুন শুরু করে দেই কিভাবে যেকোনো ঔষধের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেখতে হয় এবং সঠিক ঔষধ বা মেয়াদ থাকা ঔষধ কিনা যায়।

ঔষধের মেয়াদ দেখার নিয়ম

ট্যাবলেটের পাতার ঔষধের মেয়াদ জানার উপায়:

ঔষধের মেয়াদ দেখার নিয়ম
ঔষধের মেয়াদ দেখার নিয়ম

ধরুন কোনো ঔষধের গায়ে এভাবে লিখা আছে 1900E0221   তো আপনার বেশি কিছু দেখার প্রয়োজন নেই। আপনাকে E এর আগে কি লেখা আছে তা দেখার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি লক্ষ্য করুন যে E এর পরে কি লেখা আছে। এখানে E বলতে Expire বুঝানো হয়েছেআর E এর পরে প্রথমেই থাকে মাসের সংখ্যা বা মাসের নির্দেশনা দেওয়া থাকে। যেমন উপরে E এর পরে প্রথমেই দেওয়া আছে 02, যার অর্থ ইংরেজি দ্বিতীয় মাস বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ দ্বিতীয় মাস হলো ফেব্রুয়ারী।আর মাসের নির্দেশনার পরেই দেওয়া থাকে সালের নির্দেশনা, যে সালে ঔষধটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। উপরে E এর মাসের পরে দেওয়া আছে 21, যার অর্থ 2021 সাল

অর্থাৎ, E0221 বলতে বুঝানো হয়েছে ২০২১ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে এই ঔষধটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাবে।

তো যদি কোনো ঔষধের গায়ে লেখা থাকে 1900E0920. তাহলে আপনি কি বুঝবেন? আপনি নিশ্চয়ই এটাই বুঝবেন যে এই ঔষধটির মেয়াদ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হয়ে যাবে। কিভাবে বুঝলেন এটা? আমি তো আপনাকে আগেই বলে দিয়েছি। কেননা E এর পরেই লেখা আছে 09 যার অর্থ নবম মাস বা সেপ্টেম্বর মাস এবং E এর পরে মাসের সংখ্যার পরেই লেখা আছে আছে সালের সংখ্যা যা হলো 20 বা 2020 সাল।

ঔষধের মেয়াদ দেখার নিয়ম
ঔষধের মেয়াদ দেখার নিয়ম

তাছাড়া অনেক টেবলেটে এর ব্যাতিক্রমও লক্ষ্য করা যায়। যেমন এই ছবিটিতে দেওয়া আছে 1900EJAN21. এটা বুঝা আরও অনেক সহজ। আর আরও সহজ করার তোলার জন্যেই এভাবে লেখা হয়েছে। এটি দেখে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। না বুঝলে কোনো অসুবিধা নেই। আমি আপনাকে বুঝিয়ে দিচ্ছি।

এখানে E এর পরে লেখা আছে JAN যার অর্থ বা পূর্ণরুপ হচ্ছে January বা জানুয়ারী। এবং মাসের নামের পরেই লেখা আছে সালের নাম 21 যার অর্থ 2021 সাল। অর্থাৎ এই ঔষধটির মেয়াদ ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসে শেষ হয়ে যাবে।

সিরাপ/বোতলের ঔষধের মেয়াদ চেনার উপায়:

ঔষধের মেয়াদ দেখার নিয়ম

গ্যাসীয় ও তরল বা একথায় বোতলের ঔষধের ক্ষেত্রে ঔষধের মেয়াদ বোতলের গায়ে বা প্যাকেটের গায়ে চাপানো থাকে। তাছাড়া বোতলের ক্যাপ বা চিপিতেও ঔষধের উৎপাদন ও উত্তীর্ণের তারিখ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা থাকে। আপনি ভালোভাবে খুজলেই এটা পাবেন।

আশা করছি আমি আপনি এই ট্রিকটি শিখে ফেলেছেন। তো আপনারা সবাই ঔষধ কেনার আগে মেয়াদ সম্পর্কে যাচাই বাছাই করে ক্রয় করবেন। নইলে ছোট থেকে শুরু করে অনেক বড় রকমের সমস্যায়ও পড়তে পারেন। এমনকি মৃত্যূও ঘটতে পারে আপনার বা আপনার আত্মীয় স্বজন বা যে কারোরই। তাই আপনি নিজে এই বিষয়টি শিখুন এবং অন্যকে শিখার জন্য উৎসাহিত করুন বা শেখান। এতে করে অন্যরাও আপনার মত এই ঔষধের মেয়াদ চেক করার সিস্টেমটি জেনে যাবে এবং বড় রকমের সমস্যা হতে রক্ষা পাবে।

তাছাড়া যদি কোনো ডাক্তার মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি করে, তবে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিন। এতে করে রক্ষা পাবে অনেক অনেক মানুষ। অনেক বাটপার ডাক্তার রয়েছে, যারা কম টাকায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ ক্রয় করে জনসাধারণের কাছে বিক্রি করে অধিক মুনাফা পেতে চাই। ওদেরকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ খেলে আমাদের অসুখ সেরে যাবার কোনো সম্ভাবনা নেই। দেশের অনেক মানুষ এই মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ গ্রহণের ফলে অধিক টাকা পয়সা খরচ করার পরেও কোনো ফলাফল পায় না। কারণ মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ঔষধ খেলে কি আর লাভ হবে বলুন। ওটাতে তো কোনো কার্যক্ষমতা থাকে না বা থাকতে পারে না। কারণ ওটার টাইম বা জীবন শেষ হয়ে গেছে।

বাংলাদেশের প্রায় ৯৩% ঔষুধের ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ন ঔষুধ বিক্রি হয়। গত জুন মাসে হাইকোর্টের নির্দেশে ঔষুধ সরবরাহকারী ও বিক্রেতা ও সংরক্ষণকারীদের শণাক্ত করার জন্যে কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দেশের অধিকাংশ দোকানে মেয়াদোত্তীর্ন ঔষুধ বিক্রির তথ্য প্রকাশ করেছিলেন।

আমাদের আর সচেতন হতে হবে- যাতে করে নকল ঔষুধ বাজারে ছাড়তে না পারে । সবাই সচেতন হলে আমরা যেমন অনেক বিপদের হাত থেকে নিজেরা বাঁচবে তেমনি আমাদের আশেপাশে লোকজন ও বাঁচবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *