আকিকা কি?

আকিকা শব্দের অর্থ হলো কেটে ফেলা। সন্তানের কল্যাণে জন্য সন্তান জন্মের সপ্তম দিন আল্লাহর ওয়াস্তে পশু জবাই করাকে আকিকা বলে।

আকিকার দোয়া
আকিকা

আকিকা করতে হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য। আকিকা করা সুন্নতআকিকা করলে যেমন সওয়াব পাওয়া যায় তেমনি আল্লার রহমতে সনন্তা বিপদ- আপদ থেকে নিরাপদ থাকে।

তাই আমাদের অবশ্যই আকিকার দোয়া ও নিয়ম কানুন জানতে হবে। আকিকার দোয়া ও নিয়ম কানুন জেনে আকিকা আদায় করলে অবশ্যই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যাবে। হাদিসে আছে প্রতিটি নবজাতক সন্তান আকিকার সাথে বন্দি। তার জন্মের সপ্তম দিন তার পক্ষ থেকে পশু জবাই করতে হবে, তার নাম রাখতে হবে এবং তার মাতা মুন্ডন করতে হবে। (তিরমিজি) রাসুল (সাঃ) নিজের আকিকা নিজেই করেছিলেন। তিনি অন্যকেও আকিকা করতে বলতেন।

এই ব্লগটি পড়ে আপনারা যে বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন

  • সন্তান জন্মের সপ্তম দিন পিতা-মাতার কাজ।
  • আকিকা করার দিন /তারিখ।
  • আকিকার দোয়া।
  • আকিকার নিয়ম কানুন।
  • ছেলে সন্তানের জন্য আকিকার নিয়ম।
  • মেয়ে সন্তানের জন্য আকিকার নিয়ম।
  • কোরবানির সাথে আকিকার অংশিদার হয়া যাবে কিনা।
  • আকিকার গুশত বন্টন।
  • মৃত সন্তানের আকিকা।
  • আকিকায় কুসংস্কার।

সন্তানের জন্মের সপ্তম দিন মা-বাবার যে কাজ করতে হয়

সন্তান জন্মের সপ্তম দিন মুসলিম পিতা-মাতার যে চারটি কাজ করতে হয় সে কাজ গুলো হলো:

  1. সন্তানের সুন্দর একটি নাম রাখা ৷ যা শুনলেই মনে হবে সে মুসলিম সন্তান৷
  2. মাথা কামানো৷
  3. মাথার চুলের ওজন পরিমান সোনা বা রুপা দান করা৷
  4. আকিকা করা৷

আকিকা করার দিন/তারিখ

আকিকা সন্তানের কল্যান ও ভালোর জন্য সন্তান জন্মের ৭ম দিন করা উওম তবে ১৪, ২১,ভঅথবা ২৮তম দিনেও করা যায়। আকিকা আদায়ের জন্য নিম্নে লিখিত আকিকার নিয়ম কানুন গুলো জেনে রাখা ভালো

আকিকার দোয়া

আকিকার দোয়া বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মা হাযিহী আকিকাতু ইবনী ফুলানিন দামুহাবিদামিহী ওয়া লাহমুহা বিলাহমিহী ওয়া আজমুহা বিআযমিহী ওয়া জিলদুহা বিজিলদিহী ওয়া শা”রুহা বিশার”রিহী আল্লাহুম্মাজআলহা ফিদাআল্লি ইবনী মিনান্নার।

এরপর পড়বে ইন্নিওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি অল আরদা মিল্লাতা ইবরাহিমা হানীফাও অমা আনা মিনাল মুশরিকীন । ইন্না সলাতি ওয়া নুসুকি অমাহ ইয়াইয়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন । লাশারিকালাহু ওয়াবিজালিকা ওমিরতু অ আনা আওয়ালুল মুসলিমীন ।আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়ালাকা বিছমিল্লাহি আল্লহুআকবার ।বলে জবেহ করবে ।

জবেহকারী যদি সন্তানের পিতা না হয় তাহলে করণীয়

জবেহকারী যদি সন্তানের পিতা না হয় তাহলে ইবনী এরস্থলে বাচ্চা ও তার পিতার নাম বলবে মেয়ে হলে বিনতী বলবে এবং দামুহু ‘ লাহমুহু ‘আজমুহু ‘জিলদুহু ‘শারুহু ‘পড়তে হবে।

আকিকার নিয়ম কানুন

আকিকার পশুর ধরন

যেসব পশু দিয়ে কুরবানি সুদ্ধ হয় না সেই সব পশু দিয়ে আকিকা হয়না তাই আকিকার ক্ষেত্রে পশু বয়স ও ধরনের দিকথেকে কুরবানির পশুর গুন পাওয়া যাই এমন পশু নির্বাচন করতে হবে।

ছেলের সন্তানের জন্য আকিকার নিয়ম কানুন

ছাগল/ভেড়া /দুম্বা আকিকা দিলে ছেলে সন্তানের জন্য যেকোনো দুটি দিতে হবে । অথবা গরু/মহিষ বা উট আকিকা দিলে ছেলে সন্তানের জন্য গরু/মহিষ অথবা উটের দুই অংশ আকিকা দিতে হবে।

মেয়ে সন্তানের জন্য আকিকার নিয়ম কানুন

ছাগল /ভেড়া/অথবা দুম্বা আকিকা দিলে মেয়ে সন্তানের জন্য ছাগল/ভেড়া অথবা দুম্বার যে কোনো একটি। অথবা গরু/মহিষ /বা উট আকিকা দিলে মেয়ে সন্তানের জন্য গরু/মহিষ /বা উটের এক অংশ আকিকা দিলেই যথেষ্ট হবে।

“ছেলে সন্তানের জন্য দুটি ছাগল ও মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল জবেহ করাই যতেষ্ট”(আবু দাউদ ও নাসায়ি)

কোরবানির সাথে আকিকার অংশীদার

কোরবানির পশুর সাথে আকিকার অংশীদার হওয়া যাবে। কোরবানির শরিক ৩টি হলে সেখানে আর ২টি শরিক আকিকার দেওয়া যাবে কোরবানির মতো একই পশুতে একাদিক শরিক হয়ে আকিকা আদায় করা যাবে। (দাররুল হাক্কাম) আবার গরু /মহিষ /উট এরকম বড় পশুতে ছেলের জন্য এক শরিক আকিকা দিলেও আদাই হয়ে যাবে।

আকিকার গোশত বন্টন

কুরবানির সাথে আকিকার অংশীদার হওয়া যাবে তেমনি এটি কাচা ও রান্না দুটিই বন্টন করা যাবে আকিকার গোশতও কুরবানির গোশতর মতো বন্টন করা উওম৷ আকিকার গুশত সবাই খেতে পারবে ধনি /গরিব /ফকির /মিসকিন সকল শ্রেনির মানুষ মিলে এই গুশত খেতে পারবে এমনকি নিজের বাবা-মা নানা নানি আত্নিয় সজন মিলে খেতে পারবে।

মৃত সন্তানের আকিকা

যেহেতু তার মৃত্যু হয়েছে সেহেতু শরীয়তের সকল প্রকার বিধান তার ওপর থেকে উঠে গেছে। সুতরাং, মৃত্যুর পরে তার আর আকিকা করার প্রয়োজন নেই।

আকিকায় কুসংস্কার

অনেকেই মনে করে যে, আকিকার গোশত দাদা-দাদি ও নানা-নানি খেতে পারে না। এ ধারণা ভিত্তিহীন। এজন্যই সকনকে আকিকার নিয়ম কানুন সম্পর্কে জ্ঞান তাকা উচিত আকিকার নিয়ম কানুন জানা তাকলে এসব কুসংস্কার বিশ্বাস করবেনা আবার অনেকে মনে করে সঅন্তানের মাথার চুল মুণ্ডানোর জন্য যখন মাথার উপরের ক্ষুর টানা হবে, ঠিক সেই মুহূর্তে আকিকার জন্তু জবাই করতে হবে, এটাও ভিত্তিহীন। মাথা মুণ্ডানোর আগে-পরে যেকোনো সময় আকিকার পশু জবাই করা যাবে। হজরত আতা (রহ.)-এর এক বর্ণনা মতে, আকিকার পশু জবাই করার আগে মাথা মুণ্ডিয়ে নেওয়া উত্তম। (আল মুকাদ্দামাতুল মুমাহহাদাত : ১/৪৪৯)

Similar Posts

4 Comments

  1. খুব ভালো। আহ্লে সুন্নাতুল জামাতের মতে কি না জানালে ভালো হতো।

  2. দোয়া করি প্রত্যেকেই যেন সঠিক সময়ে আকিকা মত গুরুত্বপূর্ণ এবাদতের অংশীদার হতে পারেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *